মুর্শিদাবাদে মানস সিংহ, সমর্পিতা, হীরাঝিল কমিটির বিপ্লবের Save Heerajhil গান
সইদুল ইসলাম ,Globalnewz.online
প্রথমে একটা রোমহর্ষক সংবাদ দিয়ে একটু বিস্তৃত খবরে যাচ্ছি। মুর্শিদাবাদে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলার হীরাঝিল প্রাসাদের ভগ্নদশা নিয়ে সিনেমার বিখ্যাত প্লে ব্যাক সিংগার শুভলক্ষী দে (Subhalaxmi Dey) “সেভ হীরাঝিল” ( Save Heerajhil) ইংরেজী গান গেয়েছেন, মাতিয়ে দিয়েছেন। ২১ আগষ্ট ২০২২ তারিখে world music melodies – youtube চ্যানেলে বেরুলো। এটি শুধু একটি দেশী ও বিদেশী ভাষার YouTube চ্যানেল।
দুর্দান্ত সুর ও মিউজিক ডাইরেকশন দিয়েছেন বিখ্যাত সুরকার কুমার চঞ্চল (Kumar Chanchal)। এটি ওনার শিল্প জগতের নাম, সরকারিভাবে নাম অমল রং ( Amal Rang).
এই গানের গীতিকার পেশায় ইংরেজী ও বাংলা ভাষার কবি-লেখক ঋদেনদিক মিত্রো ( Ridendick Mitro)।
বিশেষ ভাবে সহায়তায় রেকর্ডিস্ট সুভাস মল্লিক (Subhas Mullick) ও দক্ষ মিউজিসিয়ানগন। ভিডিও কাজ করেছেন মাষ্টার শুভ।
আর এই কাজ সফল রূপে করে তুলতে ভালবেসে হীরাঝিল ও খোসবাগের ভিডিও ছবি সহায়তা করেছেন মুর্শিদাবাদের এক বিশিষ্ট ব্যাক্তি গবেষক, সাংবাদিক, ইতিহাস বিপ্লবি মানস সিংহ ( Manas Singha) । যিনি একজন আন্তর্জাতিক YouTuber. Manas Bangla – YouTube চ্যানেল দিয়ে যিনি ইতিহাসের আলোয় আলোকিত করছেন বিশ্বের অসংখ্য মানুষকে।
হীরাঝিল মানেই খোসবাগের ইতিহাস জড়িয়ে। কারন, নবাবের বাসস্থান হীরাঝিল, ও কবরস্থান খোসবাগ।
বলছি যে, সেই আলোর ফলাফল কতদূর গিয়েছে তার একটা বিষ্ময়কর নজির তুলে ধরছি। সেই প্রমান এই Save Heerajhil সংগীত সহ আরো অনেক কিছু। মূলত এই সংগীতটি নিয়ে বলবো, বাকিগুলি অনেকে জানেন, তাই সেগুলি একটু করে ছুঁয়ে যাবো। বিস্তৃত করে অকারন বাড়াবো না।
কাহিনীর বিবরনী দিতে গিয়ে কিছু তথ্য নানা দিক থেকে আসবে, সেটা কারোর বিজ্ঞাপন নয়, বরং প্রয়োজন।
আমরা জানি, বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলার ইতিহাসকে সংরক্ষন করার প্রয়োজনে ধারাবাহিক ভাবে দেশ ও বিশ্বব্যাপি আন্দোলন করে যাচ্ছেন, মুর্শিদাবাদের গবেষক, সাংবাদিক মানস সিংহ, কলকাতা থেকে আসা সাহসী বিদুষী অভিনেত্রী তথা কলকাতা দূরদর্শন এর সংবাদ পাঠিকা, ফিল্ম ডিরেক্টর, লেখিকা, শিক্ষাবীদ সমর্পিতা ( Samarpita)। হীরাঝিল বাঁচাও কমিটির ( Heerajhil Save Comittee) পদাধিকারী ব্যাক্তিগন, ইতিহাস-প্রেমি দায়িত্বশীল নাগরিকগন, আরো অনেক গবেষক ইউটুবারগন এবং মুদ্রিত পত্রিকা ও টিভির সাংবাদিকগন।
একই সাথে সমর্পিতার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ” নবাব সিরাজুদ্দৌলা মুক্ত বিদ্যালয় খোসবাগ ” এর knight (নাইট বা সৈনিক) ছাত্রছাত্রীগন, এবং আরো নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা। একই সাথে খোসবাগ এর ইতিহাস প্রেমি কমিটি সহ অনেকেই।
অনেকেই জানেন, আবার কেউ হয়তো জানেন না যে, সমর্পিতার স্কুলের ছাত্রছাত্রিদের নাইট বলে। এবং যে কোনো বয়সের কেউ ভর্তি হতে পারে। জীবনকে মুক্ত শিক্ষায় গড়ে তুলবার জন্য। ছবি আঁকা, ক্যারাটে, বকৃতা, সংগীত, স্বাধীন চিন্তা করার ক্ষমতা, সৎ সাহসিকতা, যেকোনো পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতা, বই পড়ার ইচ্ছে, যেকোনো কাজ নিখুঁত করে করবার দক্ষতা, শরীর ও মনকে অনুভব করার ক্ষমতা, যেকোনো পরিস্থিতিকে বিচার করে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা এইসব বিষয়ের প্রতি যত্ন নেবার চেষ্টা করা হয়।
এই ইতিহাস জাগরনের আন্দোলনের কাজের গুরুত্ব দেখে নানা মর্মে সহযোগীতায় এগিয়ে আসছেন প্রত্নতত্ব বিভাগের প্রতিনিধিগন এবং দেশের সরকার।
ধারাবাহিকভাবে এঁদের কাজের দ্বারা নানা সময়ে উদবুদ্ধ হয়ে কলকাতার কবি-লেখক ঋদেনদিক মিত্রো নবাবের বিষয় ও ওই কেন্দ্রিক বিস্তৃত ইতিহাস নিয়ে মুগ্ধ হয়ে মনোনিবেশ করেন, এবং প্রথমে মানস সিংহ ও সমর্পিতার দ্বারা উৎসাহীত হয়ে ওই বিষয়ের ওপর অনেক ইংরেজি ও বাংলা কবিতা লেখেন। পরপর সেগুলি প্রকাশিত হতে থাকে, ও সেগুলির গুরুত্ব ও জনপ্রিয়তা দেখে ” হীরাঝিল বাঁচাও ” ফেসবুকে এই কবিকে এই মহাবিপ্লবের প্রতিকী কবি বা brand poet হিসেবে প্রকাশ করলে তখন কবি অবাক হয়ে যান, এবং ৫-ই ডিসেম্বর ২০২১ সালে হীরাঝিল বাঁচাও আন্দোলনের ব্যাপক জনসমাগম ইউটিউবে দেখে ঋদেনদিক লেখেন ১০,০০০ (দশ হাজার) পঙক্তির একটি মহাকাব্য। আধুনিক চিন্তায় লেখা ও অন্তমিল ছন্দেই লেখা, বহু বিচিত্র ছন্দ ও চিন্তার মিশ্রন, জানা গেলো। কোথাও গদ্য ছন্দে লেখা। তবে গদ্য ছন্দটা অতি সামান্য এখানে। এসব জানলাম।
অনেক দিন স্নান না করে, অসময়ে খেয়ে, শরীর শুকিয়ে কঠিন শ্রমে লেখা। এটি কলকাতার একটি দায়িত্বশীল প্রকাশনি Book Bengal Publisher থেকে ( মালিক – সোমিন্দ্র কুমার) বেরুচ্ছে বলে জানা গেলো। তবে কাজটি বড়, তাই ২০২২ সালে শেষের দিকে বা ২০২৩ সালে কলকাতা বই মেলায় বেরুতে পারে। অনেক পাতার বই তো। এই নিয়ে মুর্শিদাবাদের কবি-সম্পাদক-সমাজসেবী শীষ মোহাম্মদ ” বুলবুলের বৈঠকখানা” পত্রিকার সম্পাদককে জানান ও তাঁরা এটি সব জেনে কবির ছবি দিয়ে বড় সংবাদ করেন। এটি একটি অতি পরিচিত PDF magazine. সংবাদটি হয়, যখন এটি ৮,০০০ (আট হাজার লাইন) পঙক্তিতে লেখা হয়। পরে সেটি আরো বেড়ে ১০,০০০ পঙক্তি হয় ওই শীষ মোহাম্মদের স্নেহশীল অনুরোধের চাপে।
সংবাদের অধিকারে বলতে হচ্ছে যে, এই মহাকাব্যটি এতোটা পেরে ওঠার সূত্র কারন —অন্তরাক্ষী নামের ঋদেনদিকের কাছে অপরিচিতা নারী, যিনি নিজেও একজন কবি-সমালোচক, যিনি মুর্শিদাবাদের একটি মূদ্রিত পত্রিকা ” নবারুন ” পত্রিকার সম্পাদক শীষ মোহাম্মদ এর WhatsApp group magazine — Potrika Nabarun ” এর এক সদস্যা। সেখানেই তিনি ওই গ্রুপে বলেন — ঋদেনদিক হোলো হাতি মেধা।”
এই কথাটি ঋদেনদিককে এই গতিতে অনেক সহায়তা করেছিল। আরো অনেকের মানসিক সহায়তাও ছিল এর পাশাপাশি।
আবার, প্রথম জীবনে ঋদেনদিকের সৃষ্টিশীল কাজকে পেশা করার পাশে সংগীত করার ইচ্ছে ছিল। এক পরিচিত দাদার গিটার হাতে ধরে উল্টোপাল্টা বাজাতে গিয়ে ইংরেজ-গায়কের গলা নকল করে গাইতে গিয়ে কল্পনা করেছিলেন ইংরেজিতে গান গাইবেন। পরে, কিছু মাস রবীন্দ্রসংগীত অনিয়মিত ভাবে শেখা ও ফাংসান করেছেন। তারপর একদম বন্ধ ছিল। ভুলেগিয়ে ছিলেন গান গাইবার ইচ্ছে। তারপর ২০১০ সালে শাকিরার (Shakira) Waka Waka গানটি টিভিতে দেখে স্বপ্ন নিলেন তাঁর লেখা শাকিরা গাইবে একদিন। ইংরেজি গান লেখায় গভীর মন দিলেন। কিন্তু শাকিরার সাথে যোগাযোগের চেষ্টায় কোনো ফল হোলো না। এদিকে ২০১৮-১৯ সালের দিকে সেই অন্তরাক্ষী নামের কবি-সমালোচক সেই WhatsApp group magazine — Potrika Nabarun -এ Rickey Nelson এর ” I will follow you ” post করেন ঘটনাক্রমে।
সেই YouTube দেখে কবি সেই রকম প্রেমের গান লিখবার ও গাইবার ইচ্ছে করেন ও লেখেন — I am not singular. লেখেন আরো অনেক প্রেমের গান সহ নানা গান।
সেটাই এবার গাইলেন ঋদেনদিক। আর এমনিতেই নানা শিল্পিরা তাঁর লেখা গান গাইছেন, সেটা তো আছেই, আলাদা করে না বললেও হয়।
কথাগুলো এই মহাকাব্যের সাথে জড়িয়ে, আবার মহাকাব্যটি জড়িয়ে নবাব সিরাজের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে বিরাট আন্দোলন নিয়ে।
বন্ধু বা পরিচিত সূত্রের মান উন্নত হলে একটা মানুষের কত বিপন্ন স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়, তার প্রমান এই ধরনের কাহিনী — ঋদেনদিক জানালেন।
মহাকাব্য লেখার স্বপ্ন ছিল অনেক আগে, সূত্র পাচ্ছিলেন না। হীরাঝিল বাঁচাও আন্দোলন জন্মদিল সেই উৎস, এটাও জানা গেলো।
একই সাথে ইংরেজী গান গাইবার স্বপ্নও তেমনি ব্যাপার। ঋদেনদিকের গাওয়া ইংরেজি গান কেমন হয়েছে সেটা দর্শক-শ্রোতাদের বিচার। কিন্তু ঘটনাটি এমন ছিল।
এবার কাহিনীর দিক ঘুরাচ্ছি অন্যদিকে। এর আগে ২০২১ সালের শেষের দিকে এই কবির ” নবাব সিরাজুদ্দৌলা মুক্ত বিদ্যালয় খোসবাগ / আমাদের তুমি গর্ব, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব… ” প্রার্থনা সংগীতটি সমর্পিতা কতৃক তাঁর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শিক্ষার স্কুলে ও নবাবের কবরে প্রার্থনা সংগীত হিসেবে গৃহীত হয় ও তাঁর সুরে তাঁর কন্ঠে গীত হয়ে প্রথমে Manas Bangla — YouTube চ্যানেলে একটি ইতিহাসের ভিডিও-তে শেষের দিকে প্রকাশিত হয়। এবং এ-সংগীত আবার নানা YouTube চ্যানেলে বেরোয় খন্ড অংশ — যখন এটি এঁদের নানা বৈপ্লবিক জমায়েত ও সভায় গাওয়া হয়।
এই প্রার্থনা সংগীতটি খুব জনপ্রিয়তা লাভ করেছে সুরের আদল ও গায়কির গুণে। লেখার মান যতই উন্নত হোক, সুর ও গায়কির গুণে তার পূর্ণ প্রকাশ ঘটে।
আর এই সব দৃশ্য ঋদেনদিকের মনে এত গভীর প্রভাব ফেলে যে — এবার বেরিয়ে গেলো Save Heerajhil song.
কবি জানালেন যে এটি মূলত Heerajhil anthem হিসেবে ভেবে লেখা। কিন্তু এইসব ক্ষেত্রে বিচার হয় নানা পরিস্থিতির ওপর। তাই Heerajhil song বলা উচিত এখন। আসলে গানটা ভালোলাগলে সেটাই আসল।
কিন্তু এটাও জানা গেল, এই ইতিহাসের ওপর সব রকমের লেখার মূল হোলো — ” নবাব সিরাজুদ্দৌলা মুক্ত বিদ্যালয় খোসবাগ / আমাদের তুমি গর্ব, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব… ” সংগীতটি। কারন, এই সংগীতের নানা ঢেউ হলো নবাব কেন্দ্রিক ইতিহাসের বাকি সব রচনা।
জানা গেলো, ঋদেনদিক জানিয়েছিলেন কুমার চঞ্চল বাবুকে — তিনি এমন সুর করবেন যেন সেটা ইতিহাস কেন্দ্রিক গান বলে যেন জ্ঞান গম্ভির নিরস না হয়, যেন ইতিহাসের আলোয় ছোট থেকে বড় সবাই নরম প্রবনতায় নেচে ওঠে। যেন মানুষের মানসিক চাপ কেটে যায়। ইতিহাস নিয়ে ভাবনার ভয় সরে যায়। এবং হীরাঝিল picnic spot হতে পারে, ভ্রমনের জায়গা, তাই সেই চঞ্চলতা নিয়ে আনন্দ করবে সবাই। সেই রকম সুর চাই। পাশে ভাগীরথীর নদীর জল, তার শীতল অনুভুতিও চাই।
সুরকার অনেক গবেষনা করে সেই অনুরোধ রাখবার চেষ্টা করে সফল হয়েছেন বলে আমাদের ধারনা। সেই মত গায়িকাও তিনি এক্ষেত্রে নির্বাচন করেছেন। বিবিধ জায়গা থেকে ফোন করে এই ইংরেজী গানের মান নিয়ে সেই মতামত পাচ্ছি।
নবাব সিরাজকে কেন্দ্র করে আধুনিক সাহিত্য, সংগীতেও কত কী সৃষ্টি হচ্ছে, এবং সেগুলির ভাবনা বাংলা ও ইংরেজিতে — দুটোতেই আন্তর্জাতিক। কাজের মানও তেমনি।
উদ্দেশ্যে ঠিক থাকলে কত ঘুরেফিরে স্বপ্ন পায় বাস্তবের রূপ, এই সব কাহিনীই প্রমান।
অন্যদিকে ঋদেনদিকের মতামত হোলো, সমর্পিতার সুরে ওই প্রার্থনা সংগীতটিও একটি আন্তর্জাতিক মানের স্কুল-প্রার্থনা সংগীত, এবং সেই প্রমানও রয়েছে তাঁর কাছে। পরিস্থিতি এলে ঋদেনদিক প্রমান দেবেন জানালেন। প্রমান না করতে পারলে লেখা ছেড়ে দেবেন, এটাও জানালেন। এই সংগীতের এই উচ্চতা পুরোটাই লেখার কারনে নয়, মূলত সমর্পিতার সুর ও গায়কির জন্য। কী কী কারনে, তার অনেক প্রমান কবির কাছে লুকানো আছে। এখন সহজে প্রকাশ করতে রাজী হলেন না।
সমর্পিতার সুরে এই প্রার্থনা সংগীতটি পলাসির যুদ্ধের ২৬৫ বছর উপলক্ষে ২৩-শে জুন ২০২২, শহীদ বেদীর উন্মোচনে হীরাঝিলে গীত হয়, এবং তাতে ঠোঁট মিলিয়েছেন বাংলাদেশ থেকে আসা নবাব সিরাজের নবম বংশধর সৈয়দা মাহমুদা, ও ভারত সরকারি থেকে এখোনো নবাব বলে ঘোষিত সম্মানীয় Nawab of Murshidabad –এর ভাই ছোটে নবাব রেজা আলি মির্জা। যিনি নিজেই একজন গজল কবি, গায়ক ও সমাজসেবি। থাকেন প্রাসাদেই।
এখানে আমাদের মতামত হোলো, নবাব সিরাজ নিয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক আছে, সেগুলি ইতিহাসের জ্ঞান ভান্ডার নিয়ে আলোচনা। কিন্তু, দেশের জন্য, আমাদের চিন্তার জন্য নবাব সিরাজ কেন্দ্রিক ইতিহাসকে আরো দেখা ও সংরক্ষন করা উচিত, এনিয়ে নিশ্চয় কারোর দ্বিমত নেই।
দেশের সব ইতিহাসের প্রতি সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আসলে এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য শুধু নবাব সিরাজের ইতিহাস রক্ষা নয়, মূলত দেশ, বিশ্বের সবাইকে সকলের ইতিহাস নিয়ে সচেতন করানো ও দায়িত্বশীল করানো, এটাই সবাইকে বুঝতে হবে। এইটা না বুঝে অনেকে এই আন্দোলনকে ভুল ব্যাখ্যা করছেন, এটাই দুঃখের। তাই এই আন্দোলনটি একটি আন্তর্জাতিক আন্দোলন, ও সেই ভাবে এটা আলোচিত হচ্ছে পৃথিবীতে নানা স্থানে।
এতসব কাহিনীর পরে একটি খুব দুঃখের খবর জানাচ্ছি, ঋদেনদিকের ওপর অনেক বছর ধরে নানা শত্রুর অত্যাচার হয়েছে নানা ভাবে, সেইসব পরিস্থিতিকে সামলাতে গিয়ে তিনি কয়েকবার চরম বিপদ থেকে বেঁচে যান। একই কারনে বারবার শরীরের রূপ যৌলুস হারায়, একই সাথে মাঝে-মাঝে সেই রূপ অতি সামান্য ফিরিয়ে আনলেও মহাকাব্য লিখতে গিয়ে কয়েক মাস স্নান করতেন অনেক দিন অন্তর, জল খাওয়া প্রায় হোত না, খাবার খেতেন অযত্নে যা হোক কিছু খাবার, একই সাথে বাবার দূর্ঘটনা ও ভুল চিকিৎসার কারনে, সেই সাথে মায়ের কিছু ভুলের জন্য চরম অসুস্থতা ও ভুল চিকিৎসার কারনে যে ভয়াবহ বিপন্নতা আসে, তারফলে দুজনকে নিয়ে নিজে গবেষনা করে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করে প্রায় এক বছর না ঘুমিয়ে তাঁদের সারিয়ে তোলেন। সেই অবস্থাতেও রাত জেগে সময় পেলে হোয়াটসঅ্যাপে লিখতেন। উনি জানালেন, ” সারাদিন রান্না, বাসন মাজা, ঘরের সব কিছু পরিস্কার সহ আরো কাজ করতে হোতো, বাবা মায়ের ওপর গবেষনা করে চিকিৎসা সহ। তখন কত বখাটে জ্ঞানী আমার সঠিক চিন্তাকে গোলমাল করে দিতে চেয়েছে। এইসময় আমি কী করে যে সব কাজ করে গেছি ও লেখা চালিয়ে গেছি জানিনা। এই সমাজে কত রকম জ্ঞানি বোকা, কেউ সেয়ানা, কেউ চরম নির্মম ধান্দাবাজ আছে — সেটা ভাবা যায় না, আমি সেইগুলি গভীর ভাবে দেখেছি। বুঝালেও বুঝবে কজন! “
এইসব কারনে শরীর যখন শুকিয়ে গেছে তখন ঋদেনদিক নিজের লেখা ইংরেজী গান কুমার চঞ্চলের সুরে গাইলেন — I am not singular. সুরকার বলেছিলেন সুরের প্রাথমিক পর্ব অনেক দিন অভ্যেস করতে হবে। তারপর দেখা যাবে। প্রায় সাড়ে তিন বছর পরে রেকর্ড করা হোলো। নানা ঝামেলায় তেমন রেওয়াজ করার সময় ছিল না।
প্রেমের গান। কিন্তু বর্ষা এলে ভিডিও স্যুটিং পিছিয়ে যাবে কয়েক মাস, তাই কতৃপক্ষের চাপে পড়ে ওই নষ্ট শরীরে ভিডিও স্যুটিং করায় নিজের সেই বিকৃত সৌন্দর্যের ভিডিও দেখে কষ্ট পান। এবং অনেক হতাস হয়ে পড়েন। এইভাবে অন্য কয়েকটি গানের ভিডিওতেও মডেলিং করতে হয়। এই মডেলিং-এর কোনটাই কবির পছন্দ হয়নি, কারন আছে।
এই নিয়ে তিনি খুব মন-মরা হয়ে আছেন। চেষ্টা করছেন যতটা সম্ভব শরীরকে সারিয়ে তুলতে।
আমরা তাঁর এই বিষয়েও সফলতা কামনা করি।
সবচেয়ে বড় কথা গুণটাই বড় জিনিস, যদিও রূপকে খারাপ করে রাখতে কে চায়৷ এটাও জীবনের একটা দাবী, কিন্তু, পরিস্থিতির কারনে বারবার বিপদের মধ্যে মানুষ পড়ে গেলে কিছু করার থাকে না।
সত্যি, ঘর, বাহির, সব জায়গায় এত কূটিলতা, জটিলতা, নানা কায়দার নৃসংসতা। ভাবা যায় না। বিপন্নতার শিকার হয় এইরকম মানুষেরা। আরো সতর্ক হয়ে বাঁচা উচিত।
জীবনের গোপন যন্ত্রনা যার আসে সেই জানে।
নবাব সিরাজুদ্দৌলার ইতিহাসের বিপ্লব এত কিছু দিয়ে আসছে ও দিচ্ছে, এজন্য আমরা এই বিপ্লবের সাথে থাকা সবাইকে শ্রদ্ধা জানাই। জানিনা আরো কত কিছু পাবো আমরা, সেই দিকে তাকিয়ে আছি।
ঋদেনদিকের এই কাজে প্রথম পথ প্রস্তুত করে দিয়েছিল কবি-সম্পাদক শ্যামল মন্ডল -এর kabyapot.com এবং আমাদের globalnewz.online ওয়েবসাইট পত্রিকা। আগে আমাদের পত্রিকার নাম ছিল www.globalnewz.online, কিন্তু পরে ঘটনা ক্রমে পদ্ধতির কিছু গলযোগ চলে আসায় আমরা শুধু globalnewz.online করি। তাই www.globalnewz.online – এ প্রকাশিত লেখাগুলি এখন দৃশ্য নয়। তাই সেখানকার বিশেষ লেখাগুলি আমরা আবার লেখকদের থেকে পেলে globalnewz.online –এ প্রকাশ করতে পারি।
আমাদের পত্রিকার এই বিপম্নতা হয়েছিল বলে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।
মাঝখানে ঋদেনদিকের নবাব কেন্দ্রিক লেখা বের করেছিল বারুইপুর, কলকাতা থেকে প্রকাশিত ” রূপুর পত্রছন্দ কবিতা সংকলন- ১ম খন্ড”, সম্পাদিকা নার্গিস খাতুন, ২০২১ সালে ১৫ আগষ্টে, বারুইপুরের ভালো একটি প্রকাশনি থেকে বহু কবির মিশ্রিত কাব্য সংকলনে।
এই সংবাদ ও মতামত আমাদের হাতে পাওয়া তথ্য নিয়ে, একই সাথে নানা দিকের বিচারে। বিপরীত ভাবনা অনেকের থাকতে পারে। সেটা তাঁদের নিজস্ব বিষয়।
৩১-শে আগষ্ট ২০২২ ” ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পরিষদ ” এর তরফে একটি বিরাট অনুষ্ঠান হবে নবাব প্রেমি ব্যাক্তিদের সহায়তায়। মনে হয় এটি বাৎসরিক অনুষ্ঠান হিসেবে হবে। শুরু এই বছর।
বাংলাদেশ ও ভারতের বিখ্যাত অনেক শিল্পি ও গবেষক, আলোচক আসার কথা। দেশের সকলের আমন্ত্রণ আছে এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য। যাঁরা আসতে চান, এখন থেকেই হোটেল ভাড়া করে নিন, বা বিকল্প কোনো থাকবার ব্যাবস্থা করে রাখুন। না হলে তখন হয়তো পাবেন না। চরম কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বা করোনা অতিমারির মত দেশে কিছু আবার না এলে — এই অনুষ্ঠান হচ্ছে এই সময়ে।
——————————