বিবাহের পূর্বে পরামর্শ (Premarital Counselling)
জয়দেব বেরা
(অতিথি অধ্যাপক, বই লেখক,সমাজচিন্তনক, সম্পাদক, সমাজকর্মী এবং MIND WELLNESS ACADEMY এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান)
বিবাহ হল এক ধরনের সামাজিক প্রতিষ্ঠান।বিবাহ হল স্বামী-স্ত্রীর এক সমাজ স্বীকৃত বন্ধন।ওয়েস্টার মার্কের মতে,”বিবাহ হল নারী-পুরুষের মধ্যে মোটামুটি এক স্থায়ী সম্পর্ক এবং সেই সম্পর্ক সন্তান প্রজনন ও সন্তান জন্মগ্রহণ করার পরবর্তী পর্যায়েও স্থায়ী।” এই বিবাহ দিয়ে শুরু হয় মানুষের গার্হস্থ্য জীবন। নর-নারীর মিলনে গার্হস্থ্যজীবন সার্থকতা লাভ করে। পুরুষের কাজের প্রেরণাদাত্রী হল নারী। নারী তার আপন অনুভূতি এবং বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সংসার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে এবং অন্তরের ভালোবাসা দিয়ে, আত্মত্যাগ করে, বিচক্ষণতার দ্বারা সংসারের সদস্যদের সঙ্গে অভিযোজন করতে সক্ষম হয়।বিবাহ শব্দটির অর্থ হল “বিশেষভাবে বহন করা”। স্বামী যেমন স্ত্রী-র ভরণ-পোষণের দায়িত্ব গ্রহণ করে, ঠিক তেমনি স্ত্রী-ও সংসার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে।
●বিবাহের পূর্বে পরামর্শ গুলি হল-
দাম্পত্যজীবনের সাফল্য নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের উপর। বিবাহের পূর্বে এই বিষয়গুলি সম্পর্কে পরামর্শ গ্রহণ করে সচেতন হলে দাম্পত্যজীবন সুখের ও শান্তির হয়। বিবাহের পূর্বে কিছু বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার হয়ে যেতে হয়।এই বিষয় গুলোর সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হল-
(১) পাত্রপাত্রীকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে তাহলে তাদের সন্তান সুস্থ এবং স্বাভাবিক হবে। বিশেষ করে কোনো জটিল যৌন রোগ বা থ্যালাসেমিয়া রোগ আছে কিনা পরীক্ষা করে নেওয়া দরকার।
(২) সুসম্পর্কের জন্য প্রয়োজন— পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, ত্যাগ স্বীকার, মানিয়ে নেওয়ার মানসিকতা, ধৈর্য, মূল্যবোধ ইত্যাদি।
(৩) আর্থিক সচ্ছলতা থাকা প্রয়োজন কারণ সুখের সময়ে অর্থকষ্ট যেন তাদের শান্তি বিঘ্নিত না করতে পারে। তাদের অর্জিত অর্থ অনুযায়ী চাহিদা পূরণ হলে সমস্যা থাকে না।অর্থাৎ পারিবারিক অর্থনৈতিক বিষয়টিও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
(৪) যৌন চাহিদা স্বামী-স্ত্রীর উভয়েরই প্রয়োজন।তাই বিয়ের আগে ছেলে-মেয়েদের পাঠক্রমের মাধ্যমে যৌনজ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন। তাহলে বিয়ের পরে কোনো সমস্যা থাকে না।কারণ যৌন বিষয়ে জ্ঞান না থাকলে দাম্পত্য জীবনে নানান পার্সোনাল সমস্যা আসবে।
(৫) সাংসারিক কাজকর্মে উভয়েই উভয়কে সাহায্য করার মানসিকতা থাকা প্রয়োজন এবং দোষত্রুটিগুলি হাসিমুখে সমাধান করা হলে কোনো অভিমান, অভিযোগ বা দুঃখ থাকে না।স্বামীর উচিত স্ত্রীকে সবদিক থেকে সাহায্য করা আবার এর বিপরীত বিষয়ও থাকবে এবং শাশুড়ির উচিত বৌমাকে ভালোবেসে সব কাজে সহায়তা করা আবার এর বিপরীত বিষয়ও থাকবে।
(৬) শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে মেয়েদের মানিয়ে নেওয়ার মানসিকতা থাকা প্রয়োজন।আবার এর বিপরীত বিষয়টিও থাকতে হবে।
৭)স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর বিষয় খুব ভালো ভাবে থাকা প্রয়োজন।দাম্পত্য জীবনে এটা খুব জরুরী।দুজনের মধ্যে ম্যানেজমেন্ট এবং আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর বিষয় যেনো খুব ভালো থাকে।