18ই জুন রবিবার,
নিজস্ব প্রতিনিধি,
কলকাতা, Global Newz
ভোট গ্রহণ হোক গণতন্ত্রের উৎসব করে,হিংসায় নয়
– জয়দেব বেরা
সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর বর্তমানে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের তৃতীয় স্তরের সরকার। বর্তমানে গ্রামবাংলাকে কেন্দ্র করে যে প্রশাসনিক, জনকল্যাণমূলক, বিচারবিভাগীয় ও প্রতিনিধিত্বমূলক স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত তাকেই পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নামে অভিহিত করা হয়।১৯৫৭ সালে সর্বপ্রথম পশ্চিমবঙ্গে পশ্চিমবঙ্গীয় চৌকিদারি পঞ্চায়েত আইন বিধিবদ্ধ হয়। ১৯৫৭ ও ১৯৬৩ সালের আইনানুসারেই পশ্চিমবঙ্গে চার-স্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু হয়। এরপর ১৯৭৩ সালে নতুন আইনের মাধ্যমে চালু হয় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা।এই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থার তিনটি স্তর হল- গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ।ভোট গ্রহণ হল এক সাংবিধানিক উৎসব, গণতান্ত্রিক উৎসব এবং নির্বাচনের নিরপেক্ষ উৎসব।এই ভোটের মাধ্যমে নিরপেক্ষ ভাবে সবাই নিজের পছন্দ মতো যে কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচন করতে পারে।কিন্তু দুঃখের বিষয় তা আর হয়ে উঠে না।এই ভোট গ্রহণকে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে মানুষে-মানুষে লড়াই,ভাই-ভাইয়ের মধ্যে সংঘাত, বিভিন্ন দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব।এই ভোট গ্রহণ এর দিন যতই এগিয়ে আসে ততই বাড়তে থাকে হিংসা, দ্বন্দ্ব,মারামারি এবং সংঘাত।এমনকি এই সংঘাতের ফলে কত মায়ের কোলও হয়ে যায় শূন্য,চরম সংঘাত লাগে বন্ধুদের মধ্যেও এমনকি বাবা ও ছেলের মধ্যেও।এই সময়টা যেনো সবাই ভয়ের মধ্যে কাটায়।তাই বলবো ভোট গ্রহণ এর প্রক্রিয়া হোক সাংবিধানিকভাবে গণতন্ত্রের মিলন উৎসব করে,নিরপেক্ষতার উৎসব করে,শান্তির উৎসব করে।লড়াই ,দ্বন্দ্ব, হিংসা ও সংঘাত এর উৎসব করে নয়।কারণ এটা কোনো সাম্প্রদায়িক লড়াই নয় এটা হল গণতন্ত্রের নির্বাচনের নিরপেক্ষতার লড়াই।তাই আমাদের দায়িত্ব নিয়ে যে বিষয় গুলোকে মাথায় রাখতে হবে তাহল- গণতন্ত্রের এই লড়াইয়ে যেন না হয় কোনো বন্ধুদের মধ্যে দ্বন্দ্ব,যেন না হয় কোনো বোমা নিয়ে সংঘাত, যেন না হয় কোনো বাবা-ছেলের মধ্যে লড়াই,যেন না হয় কোনো মায়ের কোল শূন্য।
হ্যাঁ ভোট মানেই এক লড়াই তবে সেই লড়াই হোক প্রতিযোগিতার লড়াই, নিরপেক্ষতার লড়াই,হোক দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, লড়াই হোক অশান্তির বিরুদ্ধে, লড়াই হোক সামাজিক সমস্যার বিরুদ্ধে; মানুষে মানুষে লড়াই নয়- এতে সমাজ ও মানুষ উভয়েরই ক্ষতি এবং সংবিধানেরও অপমান।তাই বলবো,ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া হোক গণতান্ত্রিক ভাবে এবং শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও মিলনের উৎসব করে;হিংসার উৎসব করে নয়।
●(লেখক তরুণ কবি,প্রাবন্ধিক, সমাজকর্মী, সমাজতত্ত্বের গেস্ট লেকচারার এবং সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক
লেখক পরিচিতি:-
জয়দেব বেরা ভারতবর্ষের একজন তরুণ কবি,সাহিত্যিক এবং লেখক।তিনি মানসী সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক। তিনি রামধনু ছদ্মনামে দুই বাংলায় পরিচিত। পিতার নাম রিন্টু বেরা ও মাতার নাম মানসী বেরা।তিনি ১৯৯৭ সালে ১২ই আগস্ট পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বৃন্দাবনপুর নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি মূলত গ্রাম্য পরিবেশে বড় হয়েছেন।তিনি বাজকুল মিলনী মহাবিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্ব বিষয়ে অনার্স নিয়ে প্রথম শ্রেণীতে বি.এ. পাশ করেন।এবং তিনি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্ব বিষয়ের উপর প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে এম.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন।তিনি হুগলির শ্রীরামপুর কলেজ থেকে Applied sociology এর উপর ডিপ্লোমা ডিগ্রী অর্জন করেন।এবং ২০২০ সালে Post Graduate Diploma In N.G.O. Management (A.U) ডিগ্রী অর্জন করেন।তিনি NSOU থেকে ২০২০ সালে Child Rights and Protection এর ওপর একটি কোর্স কমপ্লিট করেন।তিনি ২০২১ সালে NSOU থেকে MSW ডিগ্রী অর্জন করেন।তারপর তিনি ২০২২ সালে বি.এড.(WBUTTEPA) ডিগ্রি অর্জন করেন।এর পর তিনি ২০২২ সালে BLIS (NSOU) ডিগ্রি অর্জন এর জন্য ভর্তি হন।তিনি ভবিষ্যতে গবেষণা কে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে চান।
●বিভিন্ন বিষয় চর্চা ও স্কলারশিপ:-
Sociology, Social Work এর পাশাপাশি তিনি বিজ্ঞান, Astrology, আয়ুর্বেদ,যৌনবিদ্যা, ধর্ম শাস্ত্র, সাহিত্য প্রভৃতি সহ নানান বিষয়ে চর্চা করতেন।পড়াশোনার জন্য তিনি বহু সরকারি ও বেসরকারি স্করলারশিপ লাভ করেছেন। ‘জাগ্রত ছাত্র সমাজের’ পরীক্ষা দিয়ে মায়াপুর ইসকন মন্দির থেকে ২০১৩ সালে ‘ভক্তিবেদান্ত স্কলারশিপ প্রাপ্ত হন।এছাড়াও তিনি ২০১৪ সালে ‘ভূগোল’ বিষয়ের উপর পরীক্ষা দিয়ে ‘ভূগোল প্রস্তুতি মঞ্চ’ থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেন।
●পেশা:- বর্তমানে তিনি উলুবেড়িয়ার সেবাব্রত ইনস্টিটিউট অফ নার্সিং এবং গভর্মেন্ট কলেজ অফ নার্সিং,শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় গভর্মেন্ট মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হসপিটালে সমাজতত্ত্বের গেস্ট লেকচারার হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন।এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সংস্থায় কাউন্সেলর হিসেবেও নিযুক্ত রয়েছেন। তিনি ছাত্রাবস্থা থেকেই একজন অক্ষরকর্মী হিসেবে সুপরিচিতি।
●সদস্য:- তিনি ‘পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদ’ (আজীবন সদস্য)এবং ‘ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটি’ এর সদস্য।
●সাহিত্যকর্ম:-
প্রাসঙ্গিক পত্রিকা,মুকুর পত্রিকা,নবপ্রয়াস পত্রিকা,সাতসকাল নিউজ পত্রিকা,শুভ্রা পত্রিকা,অল্পনার কবিতা পত্রিকা,পোস্টম্যান পত্রিকা,কবিতা কুটির পত্রিকা, রঙমিলান্তি পত্রিকা,শিল্পনীড় পত্রিকা,আপনজন,জীবিকা বাহার, নববেলা(বাংলাদেশ), দর্পণ(বাংলাদেশ), কালের ছবি পত্রিকা(বাংলাদেশ), প্রতিভার প্রভা (বাংলাদেশ),মাসিক ঝঞ্ঝা পত্রিকা(বাংলাদেশ), স্বপ্ননীড় পত্রিকা,প্যারিস টাইমস (প্যারিস), সাময়িকী (নরওয়ে), প্রভাত ফেরী(অস্ট্রেলিয়া), আশ্রম(কানাডা), সত্যান্বেষী (বাংলাদেশ) সহ বহু ম্যাগাজিনে এবং দেশ – বিদেশের অসংখ্য পত্র-পত্রিকায় তাঁর লেখা সমাদৃত হয়েছে।
● সম্মাননা- তিনি লেখা-লেখির জন্য একাধিক সম্মাননা অর্জন করেছেন-দুইরত্ন সম্মান,কাব্য জোত্যি সম্মান, কবিরত্ন সম্মান, মুকুর শারদীয়া সম্মান-২০১৯, স্মারক সম্মান-২০১৯,মুকুর লেখনী সম্মান-২০২০, মুকুর সাহিত্য সংকল্প সম্মান, অণুছবি অণুকৃষ্টি সম্মান,কাব্যকণিকা রত্ন সম্মাননা, ঈশপ দলিত স্মৃতি সম্মাননা-২০২১(NYRA BOOKS), কাব্যশ্রী সম্মান প্রভৃতি।
● লেখালেখি ও গ্রন্থ সমূহ:- পশ্চিমবঙ্গে তিনি সর্বপ্রথম ক্লাস চতুর্থ শ্রেণিতে বেসরকারি ভাবে সমাজতত্ত্ব পড়াশোনা চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।তিনি সমাজ বিজ্ঞানে দুটি নতুন বিষয় উদ্ভাবন করেছেন এবং তা নিয়ে চর্চাও করছেন – সোশ্যাল ক্লিনিক এবং সামাজিক ডাক্তার এর ধারণা। তিনি CTN টিভিতে সাহিত্য ও সমাজতত্ত্ব নিয়ে নানান আলোচনা করেছেন।তিনি উচ্চ- মাধ্যমিক স্তরের WBHA টেষ্ট পেপারও (সমাজতত্ত্ব বিভাগ) রচনা করেছেন।তিনি ফিল্ম স্টোরি ও গান লেখার পাশাপাশি একাধিক একক ও যৌথ গ্রন্থ রচনা করেছেন।তাঁর লেখা ও পরিচালিত শর্ট ফিল্ম টি হল- ‘প্রতারণা’।আর একটি শর্ট ফিল্ম স্টোরি হল-‘পিরিয়ড’। এবং তাঁর লেখা গান গুলি হল- ‘একদিন যেতে হবে ভবপার রে’ , ‘করোনা শেষ হবে কত দিনে’, ‘তোমাকে করবো গো হৃদয়ের রানী’ প্রভৃতি।
তাঁর রচিত একক ও সম্পাদিত গ্রন্থ এবং জার্নাল গুলি হল-
★একক কাব্যগ্রন্থ- ‘কবিতার ভেলা’, ‘কবিতায় মার্ক্সবাদ’ , ‘বাস্তবতা’, ‘কবিতারাও কথা বলে’।
★যৌথ কাব্যগ্রন্থ- কবিতার মহল্লা, প্রেমনগরী,দোহার,হেমন্তিকা,কাচের জানলা,দুই মলাটে কবিসভা,কবিতার চিলেকোঠা, সমকালের দুই বাংলার কবিতা-২(বাংলাদেশ),নাম দিয়েছি ভালোবাসা, সৈকতের বালুকনা,কবির কল্পনায়, শব্দভূমি,হৃদয়ের প্রাঙ্গণে, কবিতা সংকলন-১,আলাপন,
কবিতারা কথা বলে প্রভৃতি সহ একাধিক যৌথ কাব্যগ্রন্থ।
★একক প্রবন্ধ এর বই:- ‘জাগরণ’, ‘কোভিড-১৯ ও সমাজতত্ত্ব’, ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ ও নিবন্ধ সমগ্ৰ(প্রথম খন্ড)’।
★একক নিবন্ধ এর বই :- মনের কথামালা(বাংলাদেশ)।
★সম্পাদনা মূলক বই- ‘দলিত’, ‘পলাশের ডাকে বসন্ত প্রহরীরা’,’আদিবাসীদের সমাজ ও জীবনযাত্রা’।
★সম্পাদনা মূলক জার্নাল- সেতু (ISSN: 2454-1923
14 th year, 37 Issue, December-2020.)
★একক সমাজতত্ত্বের বই/স্কুল পাঠ্য বই:- ‘সমাজতাত্ত্বিকদের ইতিবৃত্ত’, ‘ শিশুদের সমাজতত্ত্ব'(চতুর্থ শ্রেণি), ‘উচ্চ মাধ্যমিক সমাজতত্ত্বের সাফল্য'(দ্বাদশ শ্রেনি), ‘উচ্চ মাধ্যমিক সমাজতত্ত্বের প্রশ্ন সম্ভার (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি),উচ্চ মাধ্যমিক সমাজতত্ত্বের সমাধান (দ্বাদশ শ্রেণি), সমাজতত্ত্ব ও সমাজকর্মের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় সেবা প্রকল্প (NSS) প্রভৃতি