১৫ ই ডিসেম্বর ২০২২, কলকাতা STAFF REPORTER, globalnewz.online
১০ম বাংলাদেশ বই মেলায় কলকাতায় কী শিখিয়ে গেলো
[ 10 th Bangladesh Book Fair in Kolkata did teach something : report & explanation by Ridendick Mitro, India)
—————————– ——-
ঋদেনদিক মিত্রো ( ভারত)
একটা লেখা লিখতে গেলে ধারে কাছে অনেক বিষয় আসে, আর তখন মনে হয় লেখাটা বিস্তৃত হলে সামগ্রিক রসদায়ক হবে। তাই লিখেছিলাম অনেক বড় করে। কিন্তু, লেখাটা অন্য দিকে মোড় নিয়ে নতুন একটা গবেষণা মাত্রিক নিবন্ধ হয়ে গেলে সেটা আলাদা রেখে দিই। পরে বের করবো। তাই এখানে সহজ সংবাদের সাথে কিছু নিজস্ব মতামত জানালাম। এগুলিতে কারোর বা সমর্থন নাও থাকতে পারে, কিন্তু একান্ত আমার নিজস্ব চিন্তা হিসেবেও গ্রহন করতে পারেন।
খুব কষ্ট পাই পশ্চিমবঙ্গের নিখাদ নাগরিকরা, যারা বাঙালদের গালি পাড়ে এই বলে যে, বাঙালরা মানে ভারতে থাকা সাবেক পূর্ব পাকিস্তানি বা বাংলাদেশীরা ভারতে এসে ঘাঁটি গেড়ে সব কেড়ে নিলো। আমি তাদেরকে বলি যে যে-জমিতে আপনি দীর্ঘদিন চাষ করবেন না সেটা এক সময় দখল হবে। এদেশি আদি লোক বলে পরিচিতরা মানে ঘটিরা বাড়ির ছেলে মেয়েদের সাহিত্য সংস্কৃতি শেখালে সেটা দিয়ে করে খাওয়ার স্বপ্নে নিয়ে যায় না, এবং বিবাহের পরে সেইগুলিকে চুপ করিয়ে দিয়ে পুরুষদের বানানো হয় চরিত্রবান ও নারীদের বানানো হয় গৃহলক্ষী সতী। ব্যাস, এটাই সুখের জীবন, ঘটিদের কাছে। উন্নত বোধ ও অভ্যেসকে নষ্ট করে দেওয়াই সৎ চরিত্র ও সতীত্বে রূপ দেওয়া হয়। তখন, ফাঁকা জায়গায় ঢুকে পড়ে দক্ষ ও অদক্ষ বাঙালরা। দক্ষরা আরো দক্ষ হয়, অদক্ষরা দক্ষ হতে থাকে সুযোগ পেয়ে। এইভাবে ঘটিরা সব দিকে পিছিয়ে যায় নিজেদের সংস্কার ও সাহসের দুর্বলতায়। আবার বাঙালদের তৈরি সাহিত্য, শিল্প, সংস্কৃতি পড়ে ও দেখে ঘটিরা জ্ঞানের রস নেয় ও বিনোদন করে। এ এক উল্লেখযোগ্য ব্যাপার বটে।
যেকোনো লেখাতেই আমি চেষ্টা করি প্রাসংগিকতা বজায় রেখেই একটা বিস্তৃত আবহাওয়ায় প্রবেশ করতে। এখানে ততটা বলবো না, তবে খুব প্রাসংগীকতা দেখে সামান্য বলছি।
আমার apps যারা ব্যাবহার করে তারা জানে এখানে ” ঙ ” এবং ” গ ” মেশানো যায় না। তাই বংগবন্ধু বানানটা আদিরূপে করতে পারিনি। আবার ” পশ্চিমবঙ্গের ” লেখা যায়, কিন্তু ” বংগ” লিখতে গেলে বানান ভেঙে যাচ্ছে। কিংবা, আমি সঠিক বানানটা নিয়ন্ত্রনে আনতে পারছি না এই apps-এ টাইপ করতে গিয়ে। তাই মাপ করে দেবেন। পত্রিকা দপ্তরকে বলেও ওই বানানগুলি পরিবর্তন করতে পারতাম, কিন্তু তাতে ঝুঁকি ছিল অন্য কোনো অক্ষর বা শব্দ বদলে যেতে পারে, তাই সেই চেষ্টা করিনি। এবং তাতে আরো দেরী হয়ে যাবে।
পরপর বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির ছবি দেখবেন এই সংবাদের মধ্যে। ছবির সাথে সকলের নাম দেওয়া সম্ভব হয় নি। যে যার ব্যাস্ততায় মঞ্চ থেকে বেরিয়ে গেছেন। আমিও ওই সময় বিভিন্ন পরিস্থিতির কাজে বা কথায় ব্যাস্ত ছিলাম। তবে ওই দিন সকলের ছবি তোলা না গেলেও অনেকের ছবি দিয়েছি, তাঁদের ছবির সাথে অনেকেই পরিচিত আছেন, ও হবেন নানা সূত্র থেকে। আসলে এই জাতিয় দীর্ঘ সংবাদে এই জাতিয় কিছু ত্রুটি হয়, বা অপূর্ণতা থেকে যায় কোনো-কোনো সময়।
যাইহোক, সংবাদটি পড়ার শুরুতে কিছু কথা বলছি বাংলাদেশ নিয়ে। তারপর ১০ম বাংলাদেশ বইমেলা ভারতে, কলকাতার কলেজ স্কয়ারে হয়ে গেলো। এর সংবাদ করবো সংক্ষেপে। এটা কলকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তক মেলা নয়, কলকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তক মেলা হয় জানুয়ারীর শেষের দিকে। যদিও, কলকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তক মেলার সৃষ্টিও কিন্তু পরোক্ষভাবে বাংলাদেশীদের দ্বারাই, এবং সব বই মেলারই অস্তিত্ব রক্ষা হয় শতকরা আটানব্বই ভাগ বাংলাদেশী ধারার প্রকাশক, লেখক, খাবারের দোকানদার, সংবাদ মাধ্যম দ্বারা ও পাঠক পাঠিকার দ্বারা৷
না, আমি এদেশে থাকা বাংলাদেশি ওরফে বাঙালকে ও নানা সময় এসে চলে যাওয়া বাংলাদেশের নাগরিকদের বেশি জ্ঞানী বা বেশি সৎ বলে ঘটিদেরকে নিচে নামাচ্ছি না। সমাজের পরিস্থিতি খুব বেদনাদায়ক, তাই কাউকে বেশি বিশ্বাসী বলিনা মানব চরিত্রের নিরিখে, কিন্তু বাংলাদেশ সংস্কৃতির দিক থেকে ও নানা উন্নত আয়োজনে পশ্চিমবংগ, আসাম, ত্রিপুরা তথা সারা ভারতকে আলাদাভাবে আলোকিত ও গতিশীল করেছে। এই তথ্যটা সব দিক থেকেই সত্য।
এই দুনিয়ায় বাংলাভাষার অস্তিত্ব ও বাংলাভাষীদের অস্তিত্ব ও পরিচয় টিকিয়ে রেখেছে যে, তার নাম বাংলাদেশ। যে-দেশের পুস্তক তৈরি ও বিক্রির মান পেয়েছে রাষ্ট্রসংঘের স্বীকৃতি, তার নাম বাংলাদেশ। যে-দেশে বই বিক্রি হয় অনেক-অনেক, তার নাম বাংলাদেশ। যে-দেশের লোকে বই কিনে পড়ে, আলমারির ভিতর ঢুকিয়ে রেখে স্বাস রোধ করে বইকে কষ্ট দেয় না, তার নাম বাংলাদেশ। যে-দেশের রক্ত ধারা মনে করে যে —- যার যতই উচ্চ শিক্ষা ও ধন সম্পদ ও পদমর্যাদা থাক, তার যদি সাহিত্য ও শিল্পে মেধা ও এর জন্য সময় খরচের তাগাদা না থাকে তাহলে সেই ব্যাক্তি বা পরিবার অস্পৃস্য — সেই দেশ বাংলাদেশ। যে-দেশের ধারা মনে করে যে, কোনো কাজ বা পেশা ছোট নয় যদি সেটা কারোর ক্ষতি কারক না হয়, সেই দেশ বাংলাদেশ। একদম ইউরোপীয় চিন্তা। যে-দেশের নাগরিকরা বিশ্বের সব দেশে গেলে বই কেনে, বই লেখে, — তার নাম বাংলাদেশ। কিছু ব্যাতিক্রম ঘটনা এখানে গ্রাহ্য নয়।
না, আমি এই যুগে কোনো মানুষকে বিশ্বাস করতে বলিনা, কারণ, এই সময় খুব কঠিন, এই সিদ্ধান্ত সব দেশের অনেক নাগরিকের, এমনকি অনেকে নিজের বাড়ির কাউকেই বিশ্বাস করতে চান না — মানব চরিত্রের গোপন রহস্যের কারণে, সেটা আলাদা দিক, কিন্তু বাংলাদেশ মানে সভ্যতার গৌরব। বিচিত্র রকমের খাবার রান্না ও খাবার থালা সাজাতে শিখিয়েছে বাংলাদেশ। আমি নিরামিষ খাদ্যে বিশ্বাসী নানা কারণে। সেটা আলাদা। কিন্তু নিরেমিষ খাদ্যে হলেও সেখানেও বাংলাদেশের চিন্তা ও দক্ষতা অতুলনীয়।
বাংলাদেশের মানুষের শিখবার প্রবণতা বিরাট, তাই পৃথিবীতে সব দেশে গিয়ে তারা আগে শিখতে চায়। এটা অজ্ঞতার জন্য নয়, অন্তরের পান্ডিত্বের জন্য। সেই আসল পন্ডিত, যে নিজেকে সারা জীবন শিখবার জন্য নিবেদন করে।
বাংলাদেশী মানে মহৎ হবেই তা নয়, মানি, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা সভ্যতায় শ্রেষ্ঠ জায়গা পাওয়ার উপযুক্ত। আমি এটাই বলতে চাই। আমি এমন বাংলাদেশীকে দেখেছি ক্ষমার অযোগ্য, তেমনি ঘটিকে, মানে আদিতম পশ্চিমবংগীয় অনেককে দেখেছি তারাও ক্ষমা পাবার অযোগ্য। তাই আবার অনুরোধ করি এই লেখাকে কেউ পক্ষপাতী কথা ভাববেন না।
বাংলাদেশের বইমেলা নিয়ে বলতে গেলে বইয়ের সাথে ও সংস্কৃতির সাথে, সৃষ্টিশীলতার সাথে তাদের কেনো বেশি অধিকার সেটা আগে পরে কিছু কথায় বলে দিতেই হোলো, না হলে তাদের তৈরি বইমেলার মর্যাদা কত বড় সেটা জানা যায় না।
বইমেলা কী — সেটা শিখিয়েছে বাংলাদেশের ধারা। মঞ্চ তৈরির উন্নত পদ্ধতি শিখিয়েছে বাংলাদেশ। আমার মতামত সবই।
এটা তো মানতেই হবে ভারতের সহায়তা যেমন বাংলাদেশ তৈরিতে লাখ-লাখ মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছিলো, তেমনি ভারতে নানা সূত্রে পূর্ব পাকিস্থানী তথা বাংলাদেশীদের আগমন পশ্চিমবঙ্গে, আসামে, ত্রিপুরায় তথা পুরো ভারতকে আধুনিক হতে সাহায্য করেছিলো, ও তাই করে চলেছে। অন্যদিকগুলি নানা কারণেই বিতর্কিত বা ভিন্ন ভাবনায় আলোচিত হতে পারে, রাষ্ট্রিয় নিয়মে। সেটা আলাদা। তবে সব ক্ষেত্রেই নতুনতর সিদ্ধান্তের পাশাপাশি সুক্ষ্মদর্শীতার সাথে মুক্ত ভাবনার যুক্তি থাকা জরুরি।
বাঙালী জাতীর উন্নতির জন্য চাই বাঙাল ও ঘটির মধ্যে মানসিক সততার সমন্বয়, এবং মিশ্রিত জাতি তৈরি। এবং স্থুল রুচির নাগরিক, সেই সাথে কূটিল, জালি, বদমায়েসদের এক ঘরে করে সমস্ত সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা। সেটাই হবে প্রকৃত NRC. মানব সমাজকে নিরাপদ করতে হলে চাই বিপদ তৈরি করা মানুষদের জন্য আলাদা ব্যাবস্থা নেওয়া, যাতে করে সুস্থ মনের লোকেরা সুস্থ থেকে উন্নত কাজগুলি করতে পারে। এবার নিশ্চয় কারোর সন্দেহ নেই যে আমি এইসব যা বলেছি ও বলছি তা নিরপেক্ষভাবেই বলছি।
একটা কথা বলি, ওই মঞ্চেই শুনলাম — বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেমন ছিলেন সেটা নানা জনের বিতর্ক ওই দেশের মধ্যে। কিন্তু আমি ভারতের হয়ে সেই বিতর্কে অংশ নিতে পারিনা। তবে আমরা এটুকু আমরা বিশ্বাস করি যে, তিনি আলাদা একটা ঝড়।
ডিসেম্বর ১১ তারিখ, ২০২২, এই তারিখে কবি কামাল চৌধুরির একটি গ্রন্থের ইংরেজী অনুবাদ প্রকাশিত হয়। From Tungipara. বংগবন্ধুর উপর সব কবিতা লেখা। তাই সেখানে উপস্থিত বাংলাদেশের বিখ্যাত কবি ও ওই দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রাপ্তন প্রথম সেক্রেটারি বিখ্যাত কবি কামাল চৌধুরি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন ও সেই সময় তাঁর একটি কথা কানে এলো, ” আমাদের বুকের ভিতর মুজিবুর রহমান”। এই কথা শুনে তখনি আমার মাথায় লাইন জন্মালো, তারপর বাড়ি ফিরে লিখে ফেলি কবিতাটা, কয়েক লাইন লিখে শুরু করে বাকিটা কয়েকদিন পরে লিখি। নিয়ম ধরে সাজিয়েই দিচ্ছি :—
বুকের ভিতর বংগবন্ধু
—————————– –
ঋদেনদিক মিত্রো (ভারত)
বুকের ভিতর ছিলো তোমার নাম,
আছে তোমার নাম,
তুমি বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।,
যতদিন এই বাঙালী জাতি
সভ্যতায় করবে অবস্থান,
ততদিন তুমি থাকবে —
বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তুমি ও তোমার কোটি-কোটি সহযোদ্ধা,
এরা না হলে কি —
পূর্ব পাকিস্তানটি হোতো —
বাংলাদেশ নাম?
তুমি বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান!
সকল তর্কবিতর্ক যায় ঘুমে —
বিশ্ব-বিবেক তোমায় কপাল চুমে —
চক্ষু ভাসিয়ে তোমাকে দেয় সেলাম,
তোমাকে দেয় প্রনাম,
তুমি বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বাংলাভাষা পেলো স্বাধীনতা —
তোমার তৈরি রাষ্ট্রে,
সারা পৃথিবীতে বাংলাভাষা —
পেলো প্রথম স্বাধীন মুক্ত প্রান,
তোমার এবং সহ সাথিদের জন্য –,
বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আধুনিকতাই তোমার ধর্ম —
সময়েতে তাল মিলিয়ে,
যতটুকু পারো করে গেছো তুমি,
নিজের জীবন বিলিয়ে,
হাসি মুখে তুমি শত্রুর দিকে —
তাকিয়ে বললে চোখের ভাষায়,
— মারো,
মুজিবকে কি মেরে ফেলা যায়,
মুজিব তো সেই —
যে মানুষকে জাগায়,
আমাকে ঘিরেছ কেন,
বেরুতে দাও,
পথ ছাড়ো।
আমাকে মারবে বন্দুক দিয়ে,
মারো।
তারপর তুমি রক্তাত্ব,
লুটিয়ে পড়লে মেঝেতে,
লুটায়নি তোমার নাম,
তুমি বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
— —- —
এই ১০ম বাংলাদেশ বই মেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন কবি ও পন্ডিতগন কবিতা ও প্রবন্ধ পাঠ করছেন ও জীবনের বিভিন্ন গল্প বলছেন, সেগুলি না শুনলে বুঝিয়ে বলা যাবে না — কতটা গভীর ও মন-মুগ্ধকর।
প্রথম পয়মন্ত পরিচয় হয় আমার সংগে বাংলাদেশের দুই বিখ্যাত কবি-প্রাবন্ধিক মাসুদ মুস্তাফিজ, নবনিতা রুমু সিদ্দিকা। নবনিতা একই সাথে একজন উকিল হলেও, শিল্প -সাহিত্যের অনুষ্ঠানে এঁরা শিল্প-সাহিত্যের পরিচয় ছাড়া অন্য পরিচয় বহন করতে চান না। ভারতের কবি ঝর্না ভট্টাচার্য, এই প্রজন্মের কবি। ঝর্নার কবিতা ছিল বংগবন্ধুর উপর একটি দীর্ঘ গদ্য কবিতা। কিন্তু কবিতাটা ছিলো তেজদীপ্ত। অনেক পরে কবি বীথি চট্টোপাধ্যায় বংগবন্ধুর উপর একটি অন্তমিল কবিতা পড়েন।
তুলনামূলকভাবে কেউ কারোর চেয়ে কম ছিলো না। বয়সের বিচার বা ইস্কুল কলেজের মুখস্ত ডিগ্রির বিচার দিয়ে সৃষ্টির বিচার হয় না। তবে বীথি খুব সাহসী কবি, তাঁর নারী ও পুরুষ কেন্দ্রিক বিবিধ কবিতা খুব জোরালো এবং দক্ষতার দাবী রাখে, যেগুলি আমি অন্য নানা অনুষ্ঠানে শুনেছি। বীথি “প্রথম আলো ” বলে একটি কবিতা পত্রিকা চালান, যেটি আগে চালাতেন তাঁর স্বামী। কলকাতার কবিতা জগতে পত্রিকাটি একটি মূল্যবান সংযোজন।
১১তারিখের কিছু ছবি আছে, সেগুলি দেখার আগে পরে বা দেখতে-দেখতে এই লেখাটা একটু চোখ বুলিয়ে নিন। অনুরোধ। সব দিনের সংবাদ দিলে মহাভারত লেখা হতে পারে, বাংলাদেশের সাহিত্য সংস্কৃতির কাজে এত ব্যাপ্তি। আমি যে কোনো একদিন গিয়ে সেই দিনের সংবাদ দিচ্ছি সংক্ষিপ্ত আকারে।
বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যেখান থেকে ভারতীয়রা অনেককিছু শিখি। সেই কথা খুলে বলতে গেলে অনেক কিছু লিখতে হয়। এই লেখাতে আগের অংশে অনেক কিছু বলেছি এই নিয়ে।
কিন্তু সংক্ষেপে এখনকার খবরটা বলি, ২-১২ ডিসেম্বর ২০২২, ১০ ম বাংলাদেশ বইমেলা চলছিলো কলকাতা কলেজ স্কয়ারে। কলকাতার নন্দনেও মেলা হয়, বাংলাদেশের মেলা।
সব জায়গায় বাংলাদেশ দেখিয়ে দেয় তার সাহিত্য, সংস্কৃতি, নিয়মানুবর্তীতা, আলাদা রকমের অধিকার তৈরি করে। এই দেশ জানে কী করে কবিতা, শিল্প, সাহিত্য, সবকিছুকে গভীরে ভালোবাসতে হয়। বাংলাভাষাকে বিশ্বে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে বাংলাভাষার প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে। বাংলাদেশের শান্তি সৈনিকদের উন্নত মানবিক কাজে খুশি হয়ে আফ্রিকার ইংরেজি সরকারি ভাষা সম্পন্ন দেশ ” সিয়েরা লিয়ন ” দেশে সেই দেশের মাননীয় রাষ্ট্রপতি ২০০২ সালে বাংলাভাষাকে সেই দেশের যুগ্ম সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষনা করেন। এই কৃতিত্ব কার, বাংলাদেশের।
এই লেখাতে আমি কোথাও ভারতকে উপযুক্ত সম্মান দেওয়া থেকে দূরে সরে যাই নি। বরং এটাই মনে করি —- বিস্তৃত ভারতবর্ষের অস্তিত্ব পৃথিবীর ভারসাম্যে দরকার। এর অনেক কিছুই বিশ্ব শান্তির সহায়ক। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে বিশেষ কিছু আত্মঘাতি ভুল সংবিধানে থাকায় সেগুলি দেশের মানুষের মধ্যে একে অপরের সাথে অকারণ দূরত্ব, রেশারেশি, আগ্রাসন, এগুলি তৈরি করেছে ও এইসব বাড়িয়ে তুলেছে। তাই বারবার সংবিধান সংশোধন হলেও মূল আত্মঘাতি ভুলগুলি থেকে গেছে ও সেগুলি নিয়ন্ত্রন করছে দেশের আবহাওয়া। এইসব নিয়ে বিস্তারিত অনেক জায়গায় আলোচনা করেছি। এখানে সেগুলি আলোচ্য নয়।
যাইহোক, ১০ বাংলাদেশ বইমেলায় ১১তারিখের অনুষ্ঠানে :–
স্বাগত ভাষন – জনাব মেজবাহু উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমতি।
প্রধান অতিথি- কবি কামাল চৌধুরি, প্রাপ্তন প্রধান সমন্বয়কারি জাতীয় পিতা বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদজাপন কমিটি।
মূল প্রবন্ধ: — কবি তারিখ সুজাত,
বক্তা- আসরাফ আহমেদ, বাংলাদেশ,
সম্মানীত অতিথি, জনাব আবু হেনা মোরশেদ জামান, সচিব, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষন ও মূল্যায়ন বিভাগ, পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়।
আলোচনা — পংকজ সাহা, ভারত, কবি, প্রাবন্ধিক, কলকাতা দূরদর্শনের প্রাপ্তন ডাইরেক্টর,
কবি আসরাফ আহমেদ, বাংলাদেশ
কবি মৃদুল দাশগুপ্ত, বীথি চট্টোপাধ্যায়, ভারত,
সভাপতি, জনাব রিয়াজুল ইসলাম, কাউন্সেলার ( শিক্ষা ও ক্রিড়া, বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন, কলকাতা।
কবি:- বিভাষ রায়চৌধুরি, ভারত,
১১ তারিখে সঞ্চালনায় মধুমিতা বসু, বিখ্যাত বাচিক শিল্পি, ভারত।
বিশেষ সহায়তায় : ইমানুল হক, ভাষা ও চেতনা সমিতি, ভারত।
অনুষ্ঠানের শেষে একক শিল্পি, সোমালী পন্ডা, ভারত,
শামা রহমান, বাংলাদেশ।
দুজনেই নিজস্ব পর্যায়ে আন্তর্জাতিক শিল্পি। অনুষ্ঠান শেষের সময় প্রথমে এলেন শামা রহমান। তারপর সোমালী পন্ডা।
এইসব অনুষ্ঠান জীবনকে সমৃদ্ধ করে। আমাকে তেমনি করেছে।
{ঋদেনদিক মিত্রো (ভারত)}
—————————— ——–
স্মৃতি আমি এখন বিশেষ কারণে সোস্যাল মিডিয়া খুব কম দেখি ।তবে সময়ের মাঝে যতটুকু পারি চোখ বুলায়। আপনি বহু মূ্ল্যবান সময় ব্যায় করে বাংলাদেশ বইমেলাকে নিয়ে যে পাদটীকা উপস্থাপন করেছেন তা সত্যের আলোকে এক মূল্যবান দলিল ।খা্ঁটি সত্য কথা বলেছেন,হইত আপনার কেউ বিরোধিতা করবেন জেনেও আপনি যে ভাবে স্ত্রীকে সত্য বলেছেন তাতে আমি খুব গর্ববোধ করছি ।