নিজস্ব প্রতিনিধি, globalnewz.online
কলকাতা, 29 November 2022
ঝড় সমর্পিতা
————————-
ঋদেনদিক মিত্রো
[ ২০২২, নভেম্বরের শেষের দিকে “হীরাঝিল বাঁচাও” ( বাংলা লিখে ঢুকুন) ফেসবুকে সমর্পিতার সাম্প্রতিক একটি ভিডিওতে দেখলাম, তিনি তাঁর আন্তর্জাতিক শিক্ষার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ” নবাব সিরাজুদ্দৌলা মুক্ত বিদ্যালয় খোসবাগ ” নিয়ে কিছু ভুল চিন্তার মানুষদের দ্বারা বিপন্ন হচ্ছেন। এবং নানা প্রকরনে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন। এই সংবাদ শুনে আমি খুব কষ্ট পাই। লিখে ফেলি এই ” ঝড় সমর্পিতা ” কবিতাটি। এখানে ” অশ্ব ” ও ” চির প্রণম্য ” শব্দ দুটি ব্যাবহার হয়েছে, তিনি নারী হলেও একজন মানুষ বা Human হিসেবে কাজ করছেন। কারন, এটা গৃহের কাজ নয়, বিশ্ব সংসারের কাজ। তাই বিশেষ ক্ষেত্রে চিন্তার মাপে ও ভাবনার অনুভবে শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে। আবার তিনি একজন নারী, তাই সেই মাপেও অন্য দিকগুলিতেও সমতা রাখা হয়েছে। ]
ঝড় সমর্পিতা
—————————– —
ঋদেনদিক মিত্রো
তুমি ছুটছো,
তুমি ছুটবে —
যেন অশ্ব,
তোমাকে নিয়েই
ছুটবে নতুন —
ভারতবর্ষ।
তুমি কত প্রেম,
কত প্রতিবাদে —
হলে সঞ্চিতা,
তুমি আমাদের —
প্রানের শান্তি —
সমর্পিতা।
তুমি উঠছো —
তুমি উঠবে —
যেন পর্বত,
তুমি বইছো —
তুমি বইবে —
ঝড়-হিম্মৎ,৷
তুমি উড়ছো —
তুমি উড়বে —
আকাশ চিল,
তুমি ছুঁইছো —
তুমি ছুঁতে পারো —
দূর মেঘ-নীল,৷
ভোরে দরজায় —
খোলা জানলায়,
তুমিই তো রোদ,
আলো ছড়িয়ে —
আঁধারকে নাও —
ঘোর প্রতিশোধ৷
অমাবস্যায় —
তুমিই তো টর্চ,
ভেদ করো নিশা,
এমনি করেই —
তুমি দিয়ে যাও —
চলায় দিশা।
যারা বাধা দেয় —
তোমার কর্মে —
কিসের জন্য!
তারাই জানালো —
তোমার মূল্য —
চির প্রণম্য,
তুমি কেনো কাঁদো,
চোখ মুছে ফেলো,
হও হাসিময়ী,
দেখছ না তুমি —
কী ভাবে হয়েছ —
দিগন্ত-জয়ী,
যারা বলছে —
তুমি নাকি এক —
চরিত্রহীনা,
চরিত্র কী —
তারা সত্যিই —
জেনেছে কিনা!
জ্ঞানের আলোয় —
যারা প্রতিবাদী —
স্বভাবে ধর্মে,
তারা চরিত্রে —
চির অমলিন —
নিজের কর্মে।
নিজেদের দেহ —
মন, আত্মাকে —
যারাই বিষায়,
তারাই তোমায় –
নষ্টা মেয়ের
কলংক দেয়!
তাই বলে তুমি —
অসহায় হয়ে —
কাঁদবে নাকি,
যুক্তির কাছে –
কোনোদিন কি –
পারে চালাকি?
যারা বাধা দেয় —
এইভাবে আসে —
তোমার ছায়ায়,
তারাই পড়েছে —
সবচেয়ে বেশি —
তোমার মায়ায়।
এই ভাবে তারা —
নিয়েছে তোমার —
নৈকট্য,
কেনো কাঁদো তুমি —
তুমি তো ধরেছ —
আসল সত্য।
মৃত ইতিহাস —
জেগে ওঠে যার –
হাতের স্পর্শে,
সে হেরে যাবে —
হয় কি কখোনো —
ভারতবর্ষে!
তুমি কতকি —
চিত্রকল্প —
হও কবিতায়,
এত বাধা আসে —
কারন, এসেছ —
প্রতিযোগীতায়,
এর চেয়ে বেশি —
কী সম্মান —
দিতে পারে তারা,
শত্রুরা যদি —
তোমাকে মেনেছে —
সোজা শিরদাঁড়া।
চোখ মুছে ফেলো —
এত বড় পাওয়া —
নিয়ে আবৃতা,
সে তো এই তুমি —
সাহসী, বিদুষী —
সমর্পিতা।
—————————— ——————
( দুপুর ১-৫১, ২৬ নভেম্বর ২০২২)
—————————— ——————
” ঝড় সমর্পিতা ” কবিতাটি পত্রিকায় পাঠানোর সময় সন্ধ্যেবেলা, রাস্তায় চলছি, দূরে একটি পাড়ার গলিতে, দেখছি, নোংরাতে একটি বেড়াল বাচ্চা খাবার খুঁজে কাঁদছে, একটি কুকুর বাচ্চা সেও খাবার না পেয়ে হতাস, কিন্ত্য সে এইভাবে সয়ে গেছে, তাই কাঁদছে না। আর বেড়াল বাচ্চার মা পাসে বসে নিরাশ হয়ে চিন্তিত। আমিও ওদের সাথে কষ্টের একজন বন্ধু হলাম। এই ভুল ও ভুয়ো সভ্যতা আমার ভালোলাগে না। এত ভোট, চাওয়া পাওয়া কাদের জন্য? আমার এখন কিছু ভালোলাগছে না। এই প্রেম, বন্ধুত্ব, সবই নিস্প্রান। সময় কাটানোর সহজ নাটক। না, আমি ব্রহ্মচারি নই, জীবনের মূল বা আদি সত্যকে অস্বীকার করিনা, কিন্তু অস্বীকার করি এইসব অসহায় জীবদের কথা না ভেবে, এদের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা না করে প্রেমের আবেদন।
আর, একই সাথে মনে হোলো, এই বিষয়গুলি ভাববার জন্য অনুভুতি তৈরি করতে পারে সমর্পিতার মুক্ত জ্ঞানের শিক্ষার ধারা। কারন, মানুষের অনুভুতির প্রবনতা যদি সামগ্রিকে না যায় তাহলে সে অন্য জীব ও প্রকৃতির কষ্ট বুঝতে পারে না।
আমি ব্যাগে খাবার রাখি, এইসব অসহায় জীবদের খুব সাবধানে দেবার জন্য। বেড়ালের থেকে বিপদের জন্য হোমিওপ্যাথি ব্যাবহার করি। রাখি। কুকুরদের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা রাখি, খাবার দেবার সময়।
দেখি ব্যাগে কিছু আছে কিনা। না হলে এখান থেকে দোকান অনেক দূরে। দেখি কী করা যায়!
কিন্তু, এইসব অনুভুতি আমাকে কাঁদায়। এদের সুখের কথা না ভেবে সুখের অস্তিত্ব আমি বিশ্বাস করিনা। যদি করি, সেটা মিথ্যা শান্তনা।
এইসব অনুভবকে সজীব করতে পারে ইতিহাস চেতনা। কারন দুরুহ অনুভব দিতে পারে ইতিহাস চেতনা, তার ফলে মানুষ সব প্রানী ও প্রকৃতির কষ্ট বুঝতে পারবে। সভ্যতার চেতনায় আসবে আমূল পরিবর্তন।
এই রকম অনুভুতি অনেকের হয়, সেটা কোনো ব্যাপার নয়, কারন মুক্ত চেতনার অনুভুতি নানা রকমের আদলে অনেকের আছে বলেই তো এই সভ্যতা ও সৃষ্টি টিকে আছে এত বিপন্নতা টপকে। কত জনের কত ত্যাগের উপরে আছে এই প্রাণ ও প্রকৃতির ধারা। আমি বলছি এই মূহুর্তের অনুভুতি। এটাকে কেউ ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করবেন না। একান্ত বন্ধুত্বভাবেই এটাকে শেয়ার করছি। আর কিছু নয়। — ঋদেনদিক মিত্রো
—————————— ——————
ঋদেনদিক মিত্রো ( Ridendick Mitro), পেশায় ইংরেজী ও বাংলাভাষায় কবি-উপন্যাসিক-গীতিকার-কলামিষ্ ট। নবাব সিরাজুদ্দৌলার পুরানো ও এখনকার পারিপার্শ্বিক ইতিহাস ও ঘটনার উপর ১০, ০০০ (দশ হাজার) লাইনের কাহিনি ও দর্শন নিয়ে মহাকাব্য লিখেছেন, যা একটি বিখ্যাত প্রকাশনী থেকে বেরুচ্ছে। এছাড়াও নবাবের ইতিহাসের নানা পরিধির উপর অজস্র বাংলা ও ইংরেজি কবিতা, গান, বেরিয়েছিল ও বেরুচ্ছে। এবং সেগুলি এই বিপ্লবের দ্বারা গ্রহন করা হয়েছে ও কবি এই বিপ্লবের ব্রান্ড কবি হিসেবে গন্য হয়েছেন। এইসব সম্ভব হয়েছে গবেষক-সাংবাদিক মানস সিনহা (manas bangla — youtube চ্যানেল) ও সমর্পিতা ও হীরাঝিল বাঁচাও আন্দোলন, ও বিবিধ গবেষক ইউটুব চ্যানেলের দ্বারা ও সংবাদপত্রের দ্বারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অনুপ্রেরনায়। এবং এইসব লেখা প্রথম প্রকাশ করতে থাকে kabyapot.com, globalnewz.online, রূপুর পত্রছন্দ কবিতা সংকলন -১ম খন্ড, প্রকাশ ১৫ -ই আগাষ্ট, ২০২১, ইত্যাদি মাধ্যমগুলি ] :
— সম্পাদক
—————————— — —
প্রিয় সমর্পিতা দি’-কে নিয়ে ঋদেন্দিক মিত্রের কবিতাটি ভালো লেগেছে । ভালো লেগেছে একটি বিড়ালের বাচ্চাকে নিয়ে উনার কিছু অনুভূতির কথা । কবিকে ধন্যবাদ ।
আমি কৃতজ্ঞ আপনার কাছে, MD. MZIZUL WADUD, আপনি আমার কবিতাকে ভালোবেসেছেন, এতে আমার শ্রম ধন্য, তার চেয়ে ধন্য আপনি একজন সংগ্রামী নারীর অস্তিত্বকে গভীরে অনুভব করেছেন, আর সেটা আপনার ক্ষেত্রেই সম্ভব, কারণ আপনি অনুভব করেছেন পথে পড়ে থাকা অসহায় কুকুর, বেড়াল, পাখি, কীট, এইসব সুক্ষ্ম প্রাণদের অসহায়তা।
আপনাকে যে-ই হোন, নত হয়ে শ্রদ্ধা জানাই।
— ঋদেনদিক মিত্রো